এই উপমহাদেশে ধর্ম আর রাজনীতিকে কে একসাথে মিশিয়ে ফেলেছিলেন? আর কেউ না বাঙ্গু স্যেকুলারদের আইকন গান্ধী। তাদের মতে গান্ধী স্যেকুলার আর জিন্নাহ খুব ধর্মবাদী।
ইকোনোমিক এন্ড পলিটিক্যাল উইকলিতে এফ হোয়াইটের একটি নিবন্ধ ছাপা হয়েছিল ১৯৭৯ এ, শিরোনাম ছিল রিলিজিওন এন্ড পলিটিক্সঃ রৌল অব ইসলাম ইন মডার্ণ ইন্ডিয়া। এই নিবন্ধে তিনি খুব চমকপ্রদ একটা কথা বলেছেন। তিনি বলছেন, “ভারতবর্ষ একটা ধর্মীয় মহাদেশ রাজনৈতিক নয়”।
মহাত্মা গান্ধীই এই উপমহাদেশের প্রথম রাজনৈতিক ব্যক্তি যিনি এই সত্য উপলব্ধি করেছিলেন। তিনিই এই উপমহাদেশে ধর্ম আর রাজনীতিকে সমার্থক করে তুলেছিলেন । ১৯১৫ সালে কোলকাতায় ছাত্রদের এক সমাবেশে তিনি বলেন, “রাজনীতিকে ধর্ম থেকে পৃথক করা যায়না।” এরপরে তিনি আরো আগিয়ে বলেন, “ধর্মের থেকে পৃথকীকৃত রাজনীতি মৃত্যুফাদ।” তিনি এটাও বলেছিলেন, …those who say that religion has nothing to do with politics do not know what religion means. যারা বলে, ধর্মের সাথে রাজনীতির কোন যোগ নাই তারা জানেই না রাজনীতি আসলে কী জিনিস।
মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে আমার কোন সমস্যা নাই, ধর্মের সাথে রাজনীতি মিলিয়ে ফেলাতেও সমস্যা নাই। কিন্তু বাংলাদেশের স্যেকুলার রাজনীতির তিনি কীভাবে আইকন হয় সেইটা আমার বুঝে আসেনা। মহাত্মা গান্ধীকে কেন তারা ধর্মবাদী রাজনীতিবিদ বলেন না।
গান্ধী ছিলেন বৃটিশ রাজের প্রেমিক, তিনি ছিলেন বৃটিশ চরিত্রের গুণগ্রাহী। তিনি মনে করতেন ভারতীয়রা বৃটিশ রাজমুকুটের অধীন হওয়ার জন্য গর্বিত। প্রথম মহাযুদ্ধের সময় তিনি লর্ড চেমফোর্ডকে জানান, তার ইচ্ছা প্রতিটি ভারতীয়ের অন্তরে বৃটিশের প্রতি আনুগত্য সৃস্টি হোক।
জিন্নাই বরং প্রথম প্রতিবাদ করেছিলেন গান্ধীর ধর্মের সাথে রাজনীতি মেলানোর প্রবণতার বিরুদ্ধে। তিনি বলেছিলেন, গান্ধী ভারতের রাজনীতিকে বিনষ্ট করছেন ভারতের জীবনে কতগুলো বাজে লোককে আমদানী করে এবং তাদের রাজনৈতিক গুরুত্ব দিয়ে; গান্ধী রাজনীতির সাথে যেভাবে ধর্মকে মিশিয়েছেন তা একটা অপরাধ।
অদ্ভুত বৈপরিত্য ছিল গান্ধীর রাজনৈতিক অবস্থানে। ভারতে গোমাতার ক্রেইজ তৈরিতে তার ভুমিকা কম নয়। তিনি বলেছিলেন, তিনি খিলাফতের জন্য জীবন উৎসর্গ করতে পারেন কিন্তু তার পরিবর্তে মুসলমানদের ছুরির হাত থেকে গোমাতাকে রক্ষা করতে চান। তার খিলাফতের দাবীতে সমর্থন ছিল গোমাতাকে রক্ষা করার কৌশল। তিনি হিন্দুদের উপদেশও দিয়েছিলেন যদি তারা গোমাতাকে রক্ষা করতে চায় তাহলে তাদের খিলাফত আন্দোলনে সমর্থন দেয়া উচিত। কেমন ধান্দা দেখেন। এই গান্ধীই তো ভারতের জাতির পিতা।এমন বিচিত্র উদ্ভট চিন্তার রাজনৈতিক ফিগার আমাদের উপমহাদেশের প্রধানতম রাজনৈতিক চরিত্র হয়ে আছেন। আফসোস।